আইনের রক্ষক হয়ে নিজে হয়ে গেলেন ভক্ষক। বাল্য বিয়ের বিরুদ্ধে সরব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কোথাও বাল্য বিয়ে হলেই পুলিশ ও প্রশাসনের সহায়তায় বাল্য বিয়ে বন্ধ করার খবর পাওয়া যায় প্রতিদিন। তবে এবার সেই খোদ পুলিশের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে বাল্য বিয়ের।
এই ঘটনা ঘটেছে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে। জোর করে বিয়ে করা পুলিশ সদস্য হলেন তুরাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহামুদুল হাসান সবুজ (৩৬)। আর হুমকির মুখে বাল্য বিয়ের শিকার ওই তরুণীর নাম বন্যা আক্তারকে (১৩) । সে রূপগঞ্জের একটি স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। বন্যা উপজেলার বাগবেড় সিডি মার্কেট এলাকার কদম ভূইয়ার মেয়ে। এসআই সবুজ একই গ্রামে আব্দুল মালেক ওরফে সাদ্দামের ছেলে।
বন্যার পরিবারের ভাষ্য, ভয়ভীতি দেখিয়ে সবুজ ওই কিশোরীকে বিয়ে করতে চেষ্টা করছেন, এমন অভিযোগ পেয়ে বিয়ের তিন দিন আগে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বাল্যবিয়ে বন্ধ ও কন্যার পরিবারকে ভয়ভীতি না দেখানোর জন্য এসআই মাহামুদুল হাসান সবুজকে নিষেধ করেন। তা সত্ত্বেও ওই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সবুজ। জোরপূর্বক বিয়ে করে কিশোরীকে নিয়ে কক্সবাজার চলে গেছেন সবুজ। এ নিয়ে এলাকায় তোলপাড় চলছে।
বাগবেড় সিডি মার্কেট এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানান, বেশ কিছুদিন ধরে তুরাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও বাগবেড় সিডি মার্কেট এলাকার বাসিন্দা মাহামুদুল হাসান সবুজ একই গ্রামের কদম ভুঁইয়ার মেয়ে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী বন্যা আক্তারকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন। বিয়েতে রাজি না হওয়ায় বন্যা আক্তারের পরিবারের লোকজনকে ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে অবশেষে সবুজের কাছে বিয়ে দিতে বাধ্য করা হয়।
বন্যার একাধিক বান্ধবী জানায়, বাল্যবিয়ে বন্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় প্রতিরোধ করা হলেও পুলিশের এসআই মাহামুদুল হাসান সবুজ নিজেই বাল্যবিয়ে করেছেন। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে কে?
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বাল্যবিয়ের ব্যাপারে সরকার কঠোর। তবে ওই বিয়ে বন্ধের জন্য তুরাগ থানার এসআই মাহামুদুল হাসান সবুজকে নিষেধ করা হয়েছিল। সরকারি কর্মকর্তা হয়েও কিশোরী বন্যা আক্তারের পরিবারকে ভয়ভীতি দেখিয়ে গোপনে বিয়ে করে অন্যায় করেছে সে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এসব অভিযোগের বিষয়ে সাংবাদিকরা এসআই মাহামুদুল হাসান সবুজকে একাধিকবার কল করা হলেও ফোনটি রিসিভ করেননি ।